সৌন্দর্য্যের নিজস্ব কোনো সৌন্দর্য্য নেই
সৌন্দর্য্যের নিজস্ব কোনো মাপকাঠি নেই। সৌন্দর্য্য সব সময় আপেক্ষিক। আমার কাছে যা সুন্দর আপনার কাছে তা অসুন্দর বিবেচিত হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। সৌন্দর্য্যের নিজস্ব কোনো সৌন্দর্য্য নেই। সৌন্দর্য্য রয়েছে আমাদের চোখে, আমাদের বিবেকে, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে।
কোনো ব্যক্তি কিংবা বস্তুকে আমাদের চোখে, বিবেকে, আমাদের চিন্তনশক্তির বিবেচনায় যখন পজিটিভ মনে হয়, ঐ ব্যক্তি/বস্তুটি তখন আমাদের কাছে সুন্দর বলে স্বীকৃতি লাভ করে।
সকলের দেখার দক্ষতা, বিবেকের স্বচ্ছতা এবং চিন্তনশক্তির ক্ষমতা সমান নয় বলে সৌন্দর্য্য জিনিসটা আপেক্ষিক।
কারো কাছে ফর্সা ত্বক মানে সুন্দর ত্বক। কেউ আবার শ্যামাঙ্গের প্রতি দুর্বল। কারো আবার রোদে পোড়া বাদামী চেহারা ভালো লাগে। পাত্র/পাত্রী নির্বাচনে কারো ছিপছিপে গড়ন পছন্দের। কারো চাই নাদুসনুদুস। "মেয়েটা সুন্দর নয়।" "ছেলেটার মধ্যে সৌন্দর্য্যের কী আছে।"এরকম কথা বলা কাম্য নয়।
হুম আপনার কাছে সে সুন্দর নয়, কিন্তু অন্যের কাছে ঠিকই তার সৌন্দর্য্যের কদর রয়েছে।
আমরা সব সময় নিজেদের মানসিকতা দিয়ে অন্যকে জাজ করি। এটা ভুল।
সৌন্দর্য্য যাচাইয়ে ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রে আমরা চেহারার সৌন্দর্য্য অথবা আপাত দৃষ্টিতে তার বাহ্যিকতা দেখেই সত্যায়িত করি। এটা সাধারণের জন্য যথার্থ হলেও একজন সৌন্দর্য্যপ্রেমীর জন্য যথার্থ নয়।
আপনি তার চোখের গভীরতা দেখুন, তার বাঁকা চাহনির ইঙ্গিত বুঝতে চেষ্টা করুন, তার আলতো হাসির অর্থ জানুন। তার হাঁটার ভঙ্গি, কথা বলার স্টাইল, তার চুলের কাট, তার পোশাকের বিন্যাস, তার ধীরতা, তার চঞ্চলতা, তার কাঠিন্যতা, তার সারল্যতা- সৌন্দর্য্য কোথায় নেই?
একজন ব্যক্তির চা পানের স্টাইল আমাকে মুগ্ধ করেছে। বিষয়টা খুবই সিম্পল। কিন্তু এখানেও সৌন্দর্য্য রয়েছে।
খুব ক্ষুদ্র বিষয়, অতি তুচ্ছ বিষয়, নিতান্তই অবহেলার বিষয়েও সৌন্দর্য্য নিহিত আছে। যে আবিষ্কার করতে পারে তার কাছে সেটা সুন্দর, যে পারে না তার কাছে সেটা অসুন্দর।
শাহেদ আহমদ
ইন্সট্রাক্টর (সাধারণ)
প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট সুনামগঞ্জ