শিশুর স্বাধীনতাকে শাসনের ফ্রেমে বাঁধুন, শাসনের শিকলে নয়
কত আর হবে বয়স? ছয় কিংবা সাত। বড় ভাইয়ের সাথে গ্রামের হাটে গিয়েছিলাম। হুম দুই টাকা দিয়ে কিনে এনেছিলাম একখানা লুডু। বাড়িতে আনার পর লুকিয়ে রাখছি, পাছে বাবা যদি দেখে ফেলে। বাবাকে তখন বড্ড ভয় পেতাম।
বাবা ঘুমিয়ে পড়েছেন ভেবে আমি আর মেজো ভাই লুডু নিয়ে বসলাম। আচমকা বাবার আবির্ভাব।
কি রে তোমরা কী করছো? আমরা তখন রিতিমত কাঁপছি। না, বাবা তিরষ্কার করেননি। তিনিও বসে গেলেন আমাদের সাথে খেলতে। আমি নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছি না। এও কি সম্ভব?
আমাদের ছোট্ট অনুরাগ, ছোট্ট ভালোলাগাকে বাবা সমর্থন করেছেন। বাবা জানতেন লুডু খেললে পরে তার সন্তানরা নষ্ট হয়ে যাবে না। আজ আমার এই পর্যন্ত আসার পেছনে সেদিনের সেই অনুভূতি পরোক্ষ হলেও অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।
ধরুন বাবা যদি ঐ সময় অগ্নিমূর্তি ধারণ করে বকাঝকা করতেন, লুডু ছিঁড়ে ফেলতেন তখন আর যাই হোক বাবার প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা অক্ষুন্ন থাকত না। বাবার প্রতি প্রতিশোধ নিতে গিয়ে হয়ত নিজের জীবনকে বিনষ্ট করতাম। হয়ত বখাটে হতাম। হয়ত মানুষ হতে পারতাম না।
শিশু স্বাধীনতাপ্রিয়। শিশুর ব্যক্তিত্ব টনটনে। তাই বলে শিশুর অবাধ স্বাধীনতার কথা বলছি না।
শিশুর স্বাধীনতকে শাসনের ফ্রেমে বেঁধে রাখুন, কখনো শাসনের শিকলে বন্দি করতে যাবেন না। আমাদের সমস্যা আমরা শাসনের ফ্রেম আর শাসনের শিকলের পার্থক্য বুঝি না।
আমাদের বুঝতে হবে শাসনের শিকল ভাঙ্গার জন্য সংগ্রামের পথ বেছে নেয় মানুষ, যেখানে শাসনের ফ্রেমে বন্দি হতে নিজ থেকে ধরা দেয়। অথচ দুটোই শাসন
শাহেদ আহমদ
ইন্সট্রাক্টর (জেনারেল)
প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট সুনামগঞ্জ।