শিশুদের প্রমিত উচ্চারণে মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলা।
একটি
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষা হলো শিক্ষার প্রথম
সোপান । শিক্ষার্থীরা শুরুতেই
যা শিখবে, যেভাবে শিখবে তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে তার প্রতিফলন ঘটাবে।তাই
বিশ্বের প্রতিটি দেশেই প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে থাকে। সঙ্গত
কারণেই প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, শিক্ষকের যোগ্যতা, শিক্ষার্থীরা কি যোগ্যতা অর্জন
করবে তা শিক্ষা সংশ্লিষ্ট
নীতিনির্ধারক মহলের বিবেচ্য বিষয়।যুগের সাথে তাল মিলিয়ে
চলার জন্য শিক্ষার্থীর আচার,
আচরণ, কথা বলা, কার্যকরি
যোগাযোগ এসব ক্ষেত্রে পজেটিভ
পরিবর্তন আবশ্যক। এর মধ্যে অন্যতম
একটি বিষয় হচ্ছে প্রমিত উচ্চারণে মাতৃভাষা বাংলা শেখা।আর এই শিক্ষা প্রাথমিক
স্তরে অর্জন করাতে হবে। এক্ষেত্রে প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম।প্রথমত শিক্ষকের নিজের শুদ্ধ ভাবে কথা বলার
চর্চা করতে হবে।শিশুরা অনুকরণ
প্রিয়। তারা শিক্ষকদেরকে অনুকরণ
এবং অনুসরণ করে থাকে। দুঃখজনক
হলেও সত্য কিছু কিছু
শিক্ষকদের পারিপার্শ্বিক প্রেক্ষাপটের কারণে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি
করে।যেমন পারিবারিক, সামাজিক, আঞ্চলিক ইত্যাদি।। মোবাইলের অতিরঞ্জিত ব্যবহার, অনলাইন গেমিং এসবের কারণে শিশুরা শৈশব থেকেই ভাষাগত
দক্ষতা অর্জনে পিছিয়ে পড়ছে। আকাশ সংস্কৃতির প্রভাবে
শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের যথেষ্ট সময় না দেয়া,কথা কম বলা
ভাষা চর্চার পথে বাধা সৃষ্টি
করে রেখেছে। এক্ষেত্রে শিক্ষক হয়ে ওঠেন ভাষা
চর্চার জন্য একটি আস্থার
জায়গা।।
উন্নত
ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনের লক্ষ্যে
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের স্পষ্ট, শুদ্ধ ও প্রমিত উচ্চারণে
বাংলা ভাষার অনুশীলন অত্যাবশ্যক।এ লক্ষ্যে প্রথমে আমাদের পারিবারিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক পরিবেশের উন্নয়ন ঘটাতে হবে।গেমিং ও মোবাইল ফোন
শিশুদের হাতের নাগালের বাইরে রাখতে হবে। অভিভাবকদের সচেতনতা
বৃদ্ধি করতে হবে। শিশুদের
সাথে কোয়ালিটি সময় কাটানোর জন্য
উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এছাড়াও
বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের শুদ্ধ ভাবে ভাষা দক্ষতা
বৃদ্ধি করার জন্য কথোপকথন,ছড়া,কবিতা,গান,রচনা, উপস্থিত বক্তৃতা,, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ইত্যাদির আয়োজন করতে হবে। এছাড়া
গল্পের বই পড়া, SRM
বই পড়া, পত্রিকা পড়া এসবের প্রতি
উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে।
পরিশেষে বলতে পারি যে,ভাষা শৈলী, দক্ষতা
অর্জনের জন্য সামাজিক ও
বিদ্যালয়ের পরিবেশকে শিশু বান্ধব করে
গড়ে তুলতে হবে। যেখানে আনন্দময়
নিরাপদ পরিবেশে থেকে আনন্দের সাথে
শিশুরা গড়বে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভিত্তি।